Ads Here

Monday, April 20, 2020

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন


international space station live international space station inside international space station facts international space station app international space station speed how big is the international space station international space station lego iss international space station international space station cost how often can you see the international space station space station viewing tonight 2019 international space station history

মানবজাতি বরাবরই অজানাকে জানার জন্য অদম্য, আর এই অজানার পথে পাড়ি জমাতে মানুষ তৈরী করেছে নানা যানবাহন। বিভিন্ন ধরণের জলযানে চেপে মানুষ প্রথমবারের মতো নিজেদের বসবাসের জন্য পৃথিবীকে আবিষ্কার করে। এরপর উড়োজাহাজ তৈরির মাধ্যমে মানুষ পূরণ করেছে তার আজন্ম উড়ে বেড়ানোর স্বপ্ন। অবশেষে মানুষ পৃথিবীর গন্ডি পেরিয়ে পৌঁছে যায় মহাকাশে , আর বর্তমানে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিয়মিত মানুষ বসবাস করছে।

প্রতিটি যুগেই মানবজাতির সবচেয়ে চৌকস সাহসী সন্তানেরা পাড়ি জমিয়েছে আবিষ্কারের নেশায়। ঠিক একইভাবে পৃথিবীর গন্ডি পেরিয়ে মহাশুন্যের বিপদসংকুল পথে যাত্রা করতে দরকার হয়েছে মানব সভ্যতার সব চেয়ে উন্নত প্রযুক্তি। বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানুষ মহাশুন্যে গড়ে তুলেছে অভূতপূর্ব এক ঘাঁটি। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন হলো এক বিশেষ ধরণের কৃত্রিম উপগ্রহ , যেখানে মানুষ বসবাস করতে পারে। এটি এক ওজনবিহীন পৃথিবী ,যেখানে মধ্যাকর্ষণ বল এত হালকা যে ,শুধু ছোটোখাটো বস্তু নয়,মানুষসহ এখানে থাকা সকল উপাদানই সবসময়  ভেসে বেড়ায়। এখানে উপর নিচ বলে কিছু নেই তাছাড়া নেই কোনো দিন রাতের হিসাব। মনুষ্য নির্মিত বিজ্ঞানের এই দুর্গ , অনবরত ছুটে  চলেছে মহাকাশের অজানা অন্ধকারকে দূর করে। আর এই অসামান্য অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল এমন এক সময়ে যখনকার কম্পিউটারগুলোও ছিল আমাদের স্মার্ট ফোন থেকেও কম ক্ষমতা সম্পন্ন।

১৮৬৯ সালে এভরাট হেল প্রথম মহাকাশ স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা করেন , এরপর বিংশ শতকের প্রথম দিকে তিশোলকোভস্কি  হারমান ওবের্থ সম্পর্কে আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু ধারণা যোগ করেন। ১৯২৯ সালে হারমান পোটকনিক তার "The Problem of the Space Travel" বইতে সম্ভাব্য মহাকাশ স্টেশনের নকশা প্রণয়ন করেন। এরপর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) কল্পনা থেকে বাস্তবে রূপান্তর করতে বহু সময় লেগেছে। ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র একটি মহাকাশ প্রকল্প হাতে নেয় , এর নাম দেয়া হয় "Space Station Freedom" কিন্তু এটি এর মূল পরিকল্পনা বা নকশা অনুযায়ী নির্মাণ করা সম্ভব হয় নি। পরবর্তীতে অন্নান্য কয়েকটি দেশ এখানে তাদের কর্মকান্ড শুরু করার পর ১৯৯৩ সালে এর নাম দেয়া হয় "ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন" এরপর নানাধাপে বহু  চ্যালেঞ্জিং নির্মাণযজ্ঞ সম্পন্ন করে ISS আজকের পর্যায়ে আসতে পেরেছে। এরপরও এই স্টেশন নিয়ত পরিবর্তনশীল।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন মহাশুন্যে  মনুষ্য নির্মিত সবচেয়ে বড় স্থাপনা। পৃথিবীতে বিভিন্ন খন্ডে এই স্টেশন নির্মাণ করে মহাকাশে নিয়ে সংযোগ  দেয়া হয়েছে। মহাকাশ স্টেশনের একেকটি খন্ড বা Module  তৈরী করা হয়েছে এশিয়া, ইউরোপ উত্তর আমেরিকার একাধিক দেশের সহায়তায়। Module-গুলোকে পৃথিবী থেকে মহাকাশের নির্মাণস্থলে পৌঁছানোর কাজে ব্যবহার করা হয়েছে তিন ধরণের রকেট। রকেটগুলো হলো , আমেরিকান  "স্পেস শাটল ", রাশিয়ান "প্রোটন রকেট" "সৈয়ুজ রকেট" এই রকেটগুলো আবিষ্কার না হলে , মহাকাশ স্টেশন কখনোই নির্মাণ করা সম্ভব হতো না।  রকেটগুলো ব্যবহার করে মহাশুন্যে ভাসমান এই মানবদুর্গ নির্মাণ করতে ১৩ বছরের বেশি সময় লেগেছে।
international space station inside international space station facts international space station app international space station lego iss hdev end of life what does the iss look like in the night sky satellite tracker iss astronauts iss flare space station - photos international space station crew what happened to astroviewer sigma iss tracking iss tracker ham radio esa iss location international space station news inside the international space station international space station australia fires international space station visible today tiangong-2 how many space stations are there

এই স্টেশন নির্মাণের শুরুটা হয়েছিল মার্কিন রাশিয়ান দুটি স্টেশনকে মহাকাশে সংযুক্ত করার মাধ্যমে। দুটি দেশের মহাকাশযান নির্মাণের প্রযুক্তির ভিন্নতার কারণে দুটি স্টেশনকে সহজে সংযুক্ত করা যাচ্ছিলো না, পরবর্তীতে এই দুইটি ভিন্ন প্রযুক্তির মহাকাশ কামরাকে একত্র করতে নির্মাণ করা হয় এক বিশেষ ধরণের কনভার্টার।  যার নাম হলো প্রেসারাইজড মেটিং এডাপ্টার, সংক্ষেপে একে বলা হয় PMA ১৯৯৮ সালে PMA-এর  মাধ্যমে মহাকাশ স্টেশন দুটিকে যুক্ত করা হয়, কিন্তু তখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নভোচারীদের বসবাস উপযোগী ছিল না। এরপর ২০০০ সাল  পর্যন্ত একের পর এক এই স্টেশন উন্নয়নের কাজ চলতে থাকে। পরবর্তীতে ২০০০ সালের নভেম্বরের পর থেকে মহাকাশচারীরা নিয়মিতভাবে এখানে বসবাস করতে থাকে। এরপর থেকে এখনও পর্যন্ত মহাকাশ  স্টেশন জনশুন্য হয় নি।  সার্বক্ষণিক ভাবে জন মহাকাশচারী মহাকাশে অবস্থান  করে।  তাদের প্রধান উদ্দেশ্য হলো এমন সব বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা করা যা শুধুমাত্র মহাশুন্যেই করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে সাধারণত প্রত্যেক নভোচারীর অবস্থানের সময় হলো মাস।  কিন্তু কোনো কোনো ISS কর্মীকে প্রায় বছরখানেক এখানে থাকতে হয়।  দীর্ঘদিন পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে মানব শরীরে কি ধরণের পরিবর্তন আসতে পারে তাদের শরীরে সেসব পরীক্ষা করা হয়। মহাকাশ স্টেশনটির দৈর্ঘ্য একটি ফুটবল মাঠের চেয়েও বড় এবং এর ভিতরের পরিসর বেড রুমের একটি বাসার সমান। বর্তমানে ১৫টি দেশ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে তাদের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এখানে কাজ করা দেশগুলো হলো , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , রাশিয়া, কানাডা, জাপান এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির অধীনে থাকা ১১টি দেশ।  ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির অধীনে থাকা দেশগুলো হলো - যুক্তরাজ্য , জার্মানি , ফ্রান্স , স্পেন , নরওয়ে , সুইডেন , ইতালি , নেদারল্যান্ড , সুইজারল্যান্ড , বেলজিয়াম ডেনমার্ক।  বহু দেশের দক্ষ গবেষকদের অংশগ্রহনেই এটি একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণাগারে পরিণত হয়েছে।

international space station live international space station inside international space station facts international space station app international space station speed how big is the international space station international space station lego iss international space station international space station cost how often can you see the international space station space station viewing tonight 2019 international space station history


দশকের বেশি সময়ে প্রায় সাড়ে তিনশ জনেরও বেশি নভোচারী এই স্পেস স্টেশনে কাজ করেছে।  অতীতে মহাকাশ থেকে ফিরে  আসার সময় দুইটি দুর্ঘটনায় ১৪জন নভোচারী মারা যায়।  এই দুর্ঘটনা আমাদেরকে স্পষ্টভাবে মনে করিয়ে দেয়, সকল ধরণের সতর্কতা পূর্বপ্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি মহাকাশ ভ্রমণেই রয়েছে সম্ভাব্য বিপদের ঝুঁকি।  আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে করা বিভিন্ন গবেষণা মহাবিশ্ব সম্পর্কে মানবজাতির ধারণা জ্ঞানকে এক অনন্য পর্যায় নিয়ে গেছে।  সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভবিষ্যতে মহাশুন্যের আরো গভীরে অভিযান পরিচালনার জন্য মানুষ যেসমস্ত অসুবিধার সমুক্ষিন হতে পারে , এখানে অবস্থানরত বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে সেসব সমস্যা সমাধানে কাজ করা যাচ্ছে।  আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন প্রতি ঘন্টায় ২৮০০০ কিলোমিটার দুরুত্ব অতিক্রম করে। এই গতিতে পৃথিবীটাকে একবার প্রদক্ষিণ করতে ISS এর সময় লাগে মাত্র ৯২ মিনিট।  মহাকাশ স্টেশন তুলনামূলক পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে প্রদক্ষিণ করে , ঘুরতে ঘুরতে এক সময় ISS পৃথিবীর আরো কাছাকাছি চলে আসে।  যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে এটি প্রচন্ড গতিতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে , আর সাথে সাথে এর বাইরের আবরণে শুরু হবে অগ্নিকান্ড।  ধরণের মারাত্মক দুর্ঘটনা রোধ করতে নির্দিষ্ট সময় পর পর বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে স্টেশনকে ঠেলে উপরের দিকে পাঠানো হয়, যাতে করে স্টেশন তার নিজস্ব কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে পারে।
মানুষের এই মহাকাশ বিজয় নিঃসন্দেহে মানব সভ্যতার এক অবিস্মরণীয় অর্জন।





No comments:

Post a Comment